-
- অপরাধ, লিড নিউজ, সারাদেশে
- গাজীপুরের কালিয়াকৈরে মাটি ব্যবসায়ীদের রমরমা বাণিজ্য
- আপডেট সময় April, 3, 2023, 1:03 am
- 105 বার পড়া হয়েছে
মোঃ সবুজ আল-আমিন,কালিয়াকৈর (গাজীপুর) প্রতিনিধি::
সরকারী বিধি নিষেধ তোয়াক্কা না করেই প্রকাশ্যে দিবালোকে ও রাতের আঁধারে প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে মাটি পাচার করে যাচ্ছে কিছু অসাধু মাটি ব্যবসায়ী। গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ইটভাটায় মাটির চাহিদা বেশি থাকায়, মাটি ব্যবসায়ীরা সাধারণ মানুষকে কাঁচা টাকার লোভ দেখিয়ে নির্বিচারে মাটি কেটে ইটভাটায় বিক্রি করে দিচ্ছে। উল্লেখ্য যে, উপজেলার অধিকাংশ ইটভাটাই অবৈধ।
এভাবে অবাধে মাটি কেটে নেওয়ার কারণে এলাকার ঘরবাড়ি যেমন ঝুঁকিতে পড়েছে তেমনি ধ্বংস হচ্ছে ফসলি জমি ও নদীর পাড়। এছাড়া মাটি বোঝাই করা ভারী ড্রাম ট্রাক চলার কারণে নষ্ট হচ্ছে রাস্তাঘাট, ধুলাবালিতে দূষিত হচ্ছে পরিবেশ। আর এভাবে মাটি কেটে নেওয়ার ফলে জমির শ্রেণী পরিবর্তন ও নদীর দিক পরিবর্তন হচ্ছে। দিনের আলোর চাইতে রাতের আঁধারে মাটি কাটতে সাচ্ছন্দ্যবোধ মনে করেন মাটি ব্যবসায়ীরা, রাত্রিকালীন সময়ে মাটি কাটতে যেন প্রশাসনিক কোন ঝামেলা পোহাতে হয় না তাদের।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার বড়ইবাড়ী এলাকার তুরাগ নদীর পাড় কেটে মাটি বিক্রি করছে কাউসার, নবিরুল, আশরাফুল ও চাতল ষোলহাটির দুলাল,সেলিম এবং গোবিনপুরের সোহাগ।
মাটি ব্যাবসায়ী কাউসার বলেন, নদীর পাড়ে রেকর্ড সম্পত্তি থেকেই মাটি কাটা হচ্ছে, শুধু আমি কেন? আমার আশেপাশে নবিরুল,আশরাফুল সহ আরোও অনেকেই কাটতেছে। আমি কাটলে দোষ কোথায়? অভিযান চললে শুধু আমাকেই জরিমানা করা হয়,অন্য কাউকে তো জরিমানা করতে দেখি নাই।
অপরদিকে উপজেলার মধ্যপাড়া ইউনিয়নের চা-বাগান এলাকার তুরাগ নদীর পাড় কেটে মাটি বিক্রি করছে নুরুল ও খোকন নামের এই অসাধু মাটি ব্যবসায়ী।
জানা যায়, প্রতিটি মাটি ব্যবসায়ী স্থানীয় রাজনৈতিক প্রভাবশালী নেতাদের নাম ভাঙ্গিয়ে এই অবৈধ ব্যবসা পরিচালনা করে যাচ্ছে।
সরকারি গেজেটে প্রকাশিত মাটির ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ ও হ্রাসকরণ ২০১৩ সালের ৫৯ নং আইনের ৫ ধারা অনুযায়ী কোন ব্যক্তি ইট প্রস্তত করার উদ্দেশ্যে কৃষি জমি হতে মাটি কাটা বা সংগ্রহ করে ইটের কাচাঁমাল হিসাবে ব্যবহার করতে পারবে না। যদি কোন ব্যক্তি আইনের এই ধারা লঙ্ঘন করেন তা হলে তিনি অনধিক ২ (দুই) বৎসরের কারাদণ্ড বা ২ (দুই) লক্ষ টাকা অর্থদন্ড অথবা উভয় দণ্ডেদন্ডিত হইবেন।
অন্যদিকে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর কর্তৃক নির্মিত বা ইউনিয়ন বা গ্রামীন সড়ক ব্যবহার করিয়া কোন ব্যক্তি ভারি যানবাহন দ্বারা ইট বা ইটের কাচাঁমাল পরিবহন করিতে পারিবেন না। যদি কোন ব্যক্তি আইনের এই ধারা লঙ্ঘন করেন তা হইলে তিনি ১ (এক) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হইবেন। এসব আইন থাকার পরও ভূমিদস্যুরা আইনের তোয়াক্কা না করে স্থানীয় প্রশাসন চোখের সামনে এসব কর্ম চালিয়ে যাচ্ছে। বিষয়টি স্থানীয় উপজেলা প্রশাসনকে অবহিত করার পরও প্রশাসনের এই নিরব ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ করেছে এলাকাবাসীর মনে।
এ বিষয়ে উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা তাজওয়ার আকরাম সাকাপি ইবনে সাজ্জাদ বলেন, মাটি কাটার ব্যাপারে আমাদের অভিযান চলমান রয়েছে এবং একটি স্পট বাকী থাকা অবস্থায় আমাদের এই অভিযান অব্যাহত থাকবে।
এ জাতীয় আরো খবর